মো. মানিক হোসেন : রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের শতাধিক গাছ কর্তন ও বিশাল পুকুর ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।
সোমবার (১০ মার্চ) বেলা ১১টায় রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের সামনে বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি রাজশাহী মহানগর এর উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের নেতারা উপস্থিত থেকে এই ধ্বংসযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানান এবং প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস ছিল সবুজে আচ্ছাদিত, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সম্প্রতি শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে এবং একটি বড় পুকুর ভরাট করা হয়েছে, যা নগরীর বাস্তুতন্ত্রের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।”
তারা আরও বলেন, “এর আগে নওদাপাড়ায় বন বিভাগের ২০৫টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছিল। এখন একই ধরণের পরিবেশ ধ্বংসের ঘটনা আবার ঘটছে। নগরীর অক্সিজেন ভাণ্ডার একের পর এক ধ্বংস করা হলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।”
বক্তাদের দাবি এই পরিবেশ বিপর্যয়ের তদন্তে স্থানীয় পরিবেশবাদীদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি কমিটি গঠন করতে হবে এবং দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। বৃক্ষনিধন ও পুকুর ভরাটের সঙ্গে জড়িত প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। ভরাট করা পুকুর পুনরুদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। রাজশাহী টেক্সটাইল মিলের লিজ বাতিল করে, সেখানে অবশিষ্ট গাছের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কাটা গাছের জায়গায় দেশীয় বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। রাজশাহীতে পরিবেশবান্ধব নগর পরিকল্পনার জন্য নগরীর মোট ভূমির ১০-১২% জলাশয় এবং ১৫% বনভূমি সংরক্ষণের বৈশ্বিক মানদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও জুলাই ৩৬ পরিষদের সদস্য মাহবুব জামাল কাদেরী, পরিবেশ আইন গবেষক মো. শহিদুল ইসলাম, সেভ দ্য নেচার অ্যান্ড লাইফের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, আদিবাসী যুব পরিষদ রাজশাহী মহানগরের সভাপতি উপেন রবিদাস, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক নাদিম সিনা, ভাইব্রেন্ট ভিশনারিজ নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা হাসিবুল হাসনাত রিজভি, স্থানীয় বাসিন্দা মমিনুজ্জামান টেকনসহ অনেকে।
পরে, একই দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে রাজশাহীকে বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত হতে বেশি সময় লাগবে না। পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আন্দোলন চলবে।”
আপনার মতামত লিখুন :