সর্বশেষ :

জননী নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হুমকি


অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় : মার্চ ১০, ২০২৫ । ১০:৪০ অপরাহ্ণ
জননী নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হুমকি

মো. মানিক হোসেন : রাজশাহীর জননী নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এখন মানসিক চাপে। ফেসবুক স্টোরিতে একের পর এক আত্মহত্যার ইঙ্গিত দিচ্ছেন অনেকে। মূল কারণ – একটি পিকনিক। নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের জন্য সিলেটে পিকনিক আয়োজন করা হয়েছিল। তবে আর্থিক, শারীরিক ও ব্যক্তিগত নানা সমস্যার কারণে কিছু শিক্ষার্থী যেতে পারেননি। কিন্তু তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল এক অপ্রত্যাশিত শাস্তি – পিকনিকে না গিয়েও দিতে হবে পুরো অর্থ!

ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যারা পিকনিকে যাননি, তাদের কাছ থেকে পুরো টাকা নেওয়া হবে। এমনকি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, টাকা না দিলে পরীক্ষায় নম্বর কেটে দেওয়া হবে কিংবা নার্সিং ডিউটিতে বাধা দেওয়া হবে।

রাজু আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী ক্ষোভে ফেসবুকে লেখেন, “আমি যদি মারা যাই, তাহলে এর জন্য দায়ী জননী নার্সিং ইনস্টিটিউট উপশহর রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাজিদুর রহমান খোকন।”

শুধু রাজু নন, আরও অনেক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিষয়ে পোস্ট করেছেন। কারও পোস্টে সরাসরি আত্মহত্যার হুমকি, কেউবা ব্যঙ্গাত্মকভাবে তাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, যেসব শিক্ষার্থী শারীরিক সমস্যার কারণে যেতে পারেননি, তারাও রেহাই পাচ্ছেন না। এক গর্ভবতী শিক্ষার্থীকেও পিকনিকের পুরো টাকা দিতে বলা হয়েছে। এমনকি যাদের সম্প্রতি অপারেশন হয়েছে, তারাও এই অর্থ প্রদানে বাধ্য হচ্ছেন।

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বৈশাখী খাতুন বলেন, “আমরা তো স্বেচ্ছায় পিকনিকে যাইনি, তাহলে কেন আমাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হবে? এমনকি পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সামনে অপমান করা হচ্ছে, যাতে আমরা ভয় পেয়ে টাকা দিয়ে দেই।”

তবে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সাজেদুর রহমান খোকন এসব অভিযোগকে পুরোপুরি অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, “পিকনিকে যারা গিয়েছে, তারা চায় যেন যারা যায়নি, তারাও টাকা দেয়। তবে যারা সত্যিকার অর্থে সমস্যায় ছিল, তাদের জন্য ছাড় দেওয়া হবে। আর এসব ফেসবুক স্টোরি শিক্ষার্থীরা মজার ছলে দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি।”

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন মনোভাব কতটা গ্রহণযোগ্য? একজন শিক্ষার্থী যদি আর্থিক, শারীরিক বা ব্যক্তিগত কারণে কোনো অতিরিক্ত কার্যক্রমে অংশ নিতে না পারেন, তাহলে তাকে এভাবে শাস্তি দেওয়া কতটা যৌক্তিক?

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অনুযায়ী, যদি পরীক্ষায় নম্বর কেটে দেওয়া বা নার্সিং ডিউটি বন্ধের হুমকি সত্যি হয়ে থাকে, তবে এটি শুধু অনৈতিকই নয়, মানসিক নির্যাতনের সামিল।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কি শুধুই একাডেমিক জ্ঞানদানকারী প্রতিষ্ঠান, নাকি শিক্ষার্থীদের জন্য এক নিরাপদ জায়গাও? জননী নার্সিং ইনস্টিটিউটের ঘটনাটি সেই প্রশ্নকেই সামনে এনেছে।

পুরোনো সংখ্যা

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
%d bloggers like this: