মো. মানিক হোসেন : রাজশাহীতে অতিথি পাখি শিকার ও সেই ঘটনার ভিডিও প্রকাশের অভিযোগে কথিত দুই ব্লগার আল-আমিন সোহাগ ও তুলির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ মামলাটি দায়ের করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, রাজশাহীর বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির।
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এর ৬(১), ৩৪(খ) ও ৪১ ধারা অনুযায়ী দায়ের করা মামলাটি শাস্তিযোগ্য ও বিচার্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত দুই ব্লগার অতিথি পাখি কানিবক ও পাতি সরালি শিকার করে তা জবাই করে রোস্ট করার ভিডিও প্রকাশ করেন। ৩৩ সেকেন্ড ও ৫৪ সেকেন্ডের দুটি ভিডিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ভিডিওর বিষয়টি জানার পর ফরেস্ট ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর কবির প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এই ঘটনার পর রাজশাহীর বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সচেতন মহল প্রতিবাদ জানায়। ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস) সংগঠন রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে অভিযুক্ত ব্লগারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আদালত অভিযুক্তদের নামে সমন জারি করেছে। আমরা আশা করি, আইন অনুযায়ী যথাযথ বিচার হবে এবং তারা সর্বোচ্চ সাজা পাবে।”
এ বিষয়ে ইয়্যাসের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এ ধরনের অপরাধ যেন ভবিষ্যতে কেউ না করে, সেজন্য দোষীদের দ্রুত শাস্তি দিতে হবে।”
সেভ দ্য ন্যাচার অ্যান্ড লাইফ সংগঠনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মামলার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বনবিভাগ ও সংবাদকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
এই মামলার বিষয়ে অভিযুক্ত ১ নম্বর আসামি ব্লগার আল-আমিন সোহাগ বলেন, তিনি মামলার বিষয়ে অবগত নন। তবে ২ নম্বর আসামি তুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি, ফলে তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আদালতের সমন জারির পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে বন বিভাগ ও সামাজিক সংগঠনগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :