নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বর্নালীর মোড়ে অবস্থিত রয়েল কোচিং সেন্টার। এই কোচিং সেন্টারের অলিখিত মালিক ওয়াসার নির্বাহী পরিচালক সোহেল রানা ডন। সাথে যুক্ত আছেন স্ত্রী সাহেরা বানু। যিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের একজন প্রকৌশলী। যদিও কোচিংয়ের মালিক কাগজ কলমে সোহেল রানা ডনের বাবা আব্দুস সাত্তার। বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে সাবেক মেয়র লিটন ও মেয়র স্ত্রী শাহিন আক্তার রেনির ভাতিজা পরিচয়ে দাপটের সাথে চাকুরির পাশাপাশি কোচিং বাণিজ্য করে গড়েছেন টাকার পাহাড়। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সরকারী গাড়ী ব্যাবহার করা অফিস চলাকালীন সময়ে কোচিং-এ সময় দেয়া সহ নানা অনিয়মে জর্জরিত হয়েও বহাল তবিয়তে এখনো রয়েছে ওয়াসার স্বপদে।
প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫ আগষ্টের পরে হঠাৎ করে রূপ পরিবর্তন করে বিএনপির স্থানীয় কিছু নেতাদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন। ৫ আগষ্টের পরে মামলার আসামী হয়েও তাকো নেয়া হচ্ছে না আইনের আওতায়। যেন কিছুই হয়নি, তবে এর পেছনের রহস্য হিসেবে অনেকেই মনে করছেন বিএনপির নেতাদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে নিজের অবস্থান ঠিক রেখেছেন এই দম্পতিরা।
সোহেল রানা ডনের রয়েল কোচিং সেন্টারের একটি অনুষ্ঠানে সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়ে অর্ণা জামানকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শুরুতে সোহেল রানা ডন অর্ণা জামানকে তরুন প্রজন্মের আইকন আদর্শবান নেতা হিসেবে উল্লেখ করে বক্তব্য প্রদান করেন (ভিডিও থেকে বক্তব্য নেয়া)।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ডনের কোচিংয়ের সামনেই মহানগর ছাত্র লীগের সভাপতি সিয়ামের চেম্বার এবং রেললাইন পার হয়ে ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. সবুজের চেম্বার। এই দুই নেতার অবাধ যাতায়াত ছিল ডনের কোচিং সেন্টারে।
প্রকৌশলী সোহেল রানা ডনকে ছাত্র লীগের অর্থের যোগানদাতা হিসেবে ধরা হতো। ছাত্র লীগের সকল প্রোগ্রামে সোহেল রানা ডন আর্থিক সহায়তা করতেন। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ফেসবুকে ৫ আগস্টের আগের দিন রাতে ছাত্র লীগের সভাপতি সিয়াম ও সাধারণ সম্পাদক সবুজকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে খরচ বাবদ লক্ষাধিক টাকা দিয়েছেন বলে তথ্য উঠে আসে প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে।
যেভাবে রূপ বদল হলো ; ৫ আগষ্টের পরে নিজের অবস্থান ঠিক রাখতে বিএনপির নেতাদের ছত্রতলে চলে যায়। স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতাদের সাথে আতাত করে দিব্যি বিএনপি বনে যায়। আর এই কাজে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তারই কোচিংয়ের মাসুদ নামের একজন শিক্ষক ও বিএনপির নেতা সহায়তা করেন।
ফ্যাসিস্ট আ’লীগ সরকারের আমলে অর্ণা জামান ও ছাত্র লীগকে টাকা দিতো এখন বিএনপির কিছু নেতাকে টাকা দিয়ে টিকে থাকছেন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, সোহেল রানা ডন ঢাকা থেকে পরিচালিত ইউসিসি কোচিংয়ের রাজশাহী শাখা আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে নিজের করে নেন। আর এই কাজে খোদ অর্ণা জামান তাকে সহায়তা করে। সরকারি চাকরি করে কোচিং বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যাওয়া সোহেল রানা ডনদের মতো সুবিধাবাদী ব্যাক্তিরা দেশ ও জাতীর জন্য বিপদজনক।
নিজের সুবিধা হাসিল করার জন্য ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাদের তোষামোদ করেছে এখনও নিজের সুবিধা হাসিল করার জন্য বিএনপির কিছু অর্থলোভী নেতাদের টাকা দিয়ে নিজের সুবিধা হাসিল করছে।
সরকারী কর্মকর্তা হয়ে কোচিং বাণিজ্য ও আওয়ামী লীগের আর্থিকসহায়তা করার বিষয় নিয়ে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে সাংবাদিক পরিচয় গোপন রেখে তার কোচিংয়ের কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোচিং সেন্টার তার বাবার নামে হলেও তার বাবাকে কোচিং স্টাফরা কখনো কোচিংয়ের কোন কাজে দেখেনি সকল কাজ ডন ও তার স্ত্রী করে।
এবিষয়ে বক্তব্য নিতে সোহেল রানা ডনের সাথে যোগাযোগ করা হলে দি রয়েল কোচিংয়ের সাথে সম্পৃক্ত আছেন। কিন্তু উনার সাথে বিস্তারিত কথা বলতে চাইলে উনি প্রতিবেদককে ওয়াসা অফিসে যেতে বলেন।
আপনার মতামত লিখুন :