নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর তানোর উপজেলার মোহাম্মাদপুর গ্রামে নমির উদ্দীন নামের এক ব্যক্তি অবৈধ ভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্যে ড্রেনের জায়গা দখল করেছেন। এসটিডব্লিউ আওতাভুক্ত ফসলের মাঠে নিজস্ব উদ্যোগে জোরপূর্বক প্রভাবশালীর এই অবৈধভাবে সেচ কাজ বন্ধ করতে বলায় এসটিডব্লিউ স্কীমের মালিককে হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যেখানে ভুক্তভোগী এসটিডব্লিউ স্কিমের সত্ত্বাধিকারী ইমতিয়াজ বকুল উভয়ের জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি আশংকা করছেন বলে এক অভিযোগে উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কে পল্লী বিদ্যুতের তানোর জোনাল অফিসে একটি অভিযোগ করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অভিযোগ করেন ওই গ্রামের মো. এমদাদুল হকের ছেলে মো. ইমতিয়াজ বকুল। অভিযুক্ত প্রতিবেশী মৃত তাহের উদ্দীনের ছেলে নমির উদ্দীন।
রোববার (১ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, পুকুরে পানি দেয়ার জন্য বোরিং করা মেশিন দিয়ে এসটিডব্লিউ স্কীমের জমিতে পানি সেচের উদ্যোগ। শিল্প সংযোগ ও আবাসিক মিটার থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে বোরিং করা মেশিন দিয়ে প্রায় ২০ বিঘা জমিতে দিতে ড্রেন নির্মাণ করেছেন নমির উদ্দীন।
স্থানীয়রা জানান, এসটিডব্লিউ স্কীমের আওতাধীন নির্ধারিত জায়গা রয়েছে। সেই জায়গার মধ্যে কোন কৃষক নিজস্ব উদ্যোগে নিজের ফসলের জমিতেও সেচ দিতে পারেন না। সেখানে নমির উদ্দীন সেচ কাজের জন্য এসটিডব্লিউ স্কীমের নিয়ম অমান্য করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে নিজস্ব মেশিন দিয়ে সেচ কাজ চালিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করেছেন। এমনকি ড্রেনও নির্মাণ করেছেন। সকল কৃষককে তাঁর কাছ থেকে কম রেটে পানি নেয়ারও প্রলোভন দেখিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে, ইমতিয়াজ বকুল এসটিডব্লিউ স্কীমের সত্ত্বাধিকারী। একমাত্র তিনিই ফসলের মাঠে পানি দেয়ার ক্ষমতা রাখেন।
অভিযোগে জানা গেছে, মোহাম্মদপুর মৌজার জে, এল-৭৬, দাগ নং-৭৯৭ দাগে ইমতিয়াজ বকুলের একটি STW সেচ পাম্প আছে। এটির হিসাব নম্বর. ৯৬৮-৬৪০৯। অন্যদিকে, সেচ পাম্প থেকে ৫০০ ফিট দূরে আরো একটি STW সেচ পাম্প আছে। এটির মালিক মোসা. শ্যামলি খাতুন। এটির হিসাব নম্বর. ৯৬৮-৬৪১০। ওই এলাকায় ইমতিয়াজ বকুলের STW সেচ পাম্পের স্কিমে মৃত মাদার বকসের ছেলে মো. গোলাম মর্তুজার নামে একটি শিল্প সংযোগ আছে। সেই শিল্প সংযোগটির মিটার এবং ঘর পুকুর পাড়ে আছে। সংযোগটির বোরিং প্রায় ১০০ ফিট দূরে। যা সরকারি পাকা রাস্তা অতিক্রম করে মো. নমির উদ্দীনের নিজ নামিও জায়গায় বোরিং করা হয়েছে। যা পল্লী বিদ্যুৎ আইনের পরিপন্থি। এই অসৎ উদ্দেশের মূল কারণ এবং লক্ষ্য হলো কৃষি জমিতে পানি সেচ দেওয়া। গোলাম মর্তুজার হুকুমে শিল্প সংযোগ থেকে কৃষিতে সেচ দেওয়ার জন্য যথারিতি মো. নমির উদ্দীন হাউজ এবং ড্রেন নির্মান করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মো. গোলাম মর্তুজা তাঁর শিল্প সংযোগ থেকপ সেচ পরিচালনা করছেন। এই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা না হলে যেকোন সময় উভয়ের জান মালের ক্ষতি সাধিত হতে পারে। নমির উদ্দীন জোরপূর্বক পানি সেচ দেওয়ার জন্য ৫০০ ফিট পরিমাণ দূরত্ব মাটির নিচ দিয়ে ড্রেন নির্মাণ করেছেন।
অভিযোগকারী ইমতিয়াজ বকুল বলেন, ইমতিয়াজ বকুল জানান, আমার STW সেচ পাম্পের স্কিমে বিগত ৬ (ছয়) মাস ধরে জোর পূর্বক বিশৃঙ্খলার সাথে আবাসিক মিটার থেকে মো. নমির উদ্দীন সেচ প্রদান করছে। বার বার নিষেধ করার সত্তেও কোন প্রকার বাধা নিষেধ মানছেনা। তাতে সেচ স্কিমে নানা প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাকে প্রানণাশেরও হুমকি দিয়েছে নমির উদ্দীন। সন্ধ্যা হলেই আমাকে বাড়ি ছেড়ে থাকতে হচ্ছে। আদিবাসী লাঠিয়ালদের সহযোগিতায় যখন তখন আমার ওপর হামলা করতে পারে। আমি তাঁদের অবৈধ পানি সেচ বন্ধ করতে মিটার বাতিলসহ দ্রুত সুষ্ঠু সমাধান চাইছি।
অভিযুক্ত মো. নমির উদ্দীন বলেন, ইমতিয়াজ বকুল এসটিডব্লিউ স্কীমের মালিকানা দাবি করছেন। উনার সেচ প্রদানের ক্ষমতা আছে। কিন্তু মালিকানার কোন কাগজ নেই। আর তিনি সেচ কাজের দায়িত্ব নিলেও প্রতিবছর তাঁর অবহেলার জন্য ফসলের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঠিক মত ফসলে পানি দেয় না। আলুর জমিতে ৬ সেচ দিতে হয়। সেখানে ৩ সেচ দিয়েই নাই। কিন্তু টাকা ঠিকই নেই। টাকা নেয়ার সময় নানা রকম অজুহাত দেয়। তাঁর ওপর আমি কোন দায়িত্ব দিয়ে ফসলের ক্ষতি করতে পারবো না। এছাড়াও পূর্বের টাকা পয়সার লেনদেনে ইমতিয়াজ বকুলের সাথে আমার মনোমালিন্য রয়েছে। সে সবার ফসলে পানি দিলেও আমার ফসলে দেবে না। তাই নিজেই সেচ দেবো। আমাকে কেউ বাঁধা দিতে আসলে ছেড়ে কথা বলবো না। এসটিডব্লিউ স্কীমের মালিক আসুক। বকুল তো মালিক না।
সেচ কাজে অবহেলা ও মালিকানা প্রশ্নের জবাবে মোজাহার নামের এক সাবেক এসটিডব্লিউ স্কীমের মালিক বলেন, আমি বকুল ও শ্যামলির এসটিডব্লিউয়ের মালিক ছিলাম। তা দুইজনের কাছে বিক্রি করেছি। শ্যামলীর এসটিডব্লিউ স্কীমের মালিকানা সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেয়া হলেও বকুলের টা সরকারি অফিসের লোকজন এখনও করে দেয়নি। আর নমির উদ্দীনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। নমির উদ্দীনের জমিতে আমিও পানি সেচ দিতাম। ফসলের মাঠ ডুবে থাকলেও বলতেন আরও পানি দেন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তানোর জোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :