সামিয়া রাজি : পড়ছেন ইংরেজি বিভাগে কিন্তু তার সকল আগ্রহ খামার ঘিরেই। করোনার সময় যখন সবাই গৃহবন্দি অবস্থায় তখন পড়াশুনার পাশাপাশি গড়ে তোলা তার ছোট্ট ব্যবসা আজ সারা দেশে সমাদৃত। দুই হাজার টাকায় শুরু করা ব্যবসা আজ লাখ টাকায় রূপ নিয়েছে। নাম মোঃ সাজ্জাদুল ইসলাম আপন। বর্তমানে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
বাড়ি বগুড়ার গাবতলী। প্রথম বর্ষে পড়ার সময় যখন বিশ্ব করোনার প্রবল থাবাড় সম্মুখীন হয় তখন তিনি বগুড়া শহরের সেউজগাড়ি এলাকার একটি ছাত্রাবাস ছেড়ে বাসায় ফিরে পশু পাখির প্রতি ভাল লাগাকে গুরুত্ব দিয়ে শখের বসে বাহারি শৌখিন মুরগি প্রতিপালনে মনোযোগ দেন। মুরগির প্রতি ভালো লাগা থেকে একটি ফেসবুক পেজ ও খুলে বসেন শখের মুরগিওয়ালা নামে।
সেই থেকেই যাত্রা শুরু আপনের। আপন জানান, শুরুতে তিনি মায়ের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে মুরগি পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে প্রায় ২৮ প্রজাতির বাহারি মুরগি রয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ১০-১২ লক্ষ টাকা। খামার দেখাশুনার জন্য পরিবারের লোকজন ছাড়াও রয়েছে ১২ জন কর্মচারি। তার খামার দেশি বা সাধারন পোল্ট্রি মুরগির নয়। তার খামারে রয়েছে বিদেশি গ্রাহাম সিল্কি ইত্যাদি প্রজাতির মুরগি যার একেক জোড়ার বাজার মূল্য প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এছাড়া এর চেয়েও বেশি দামি মুরগি আছে বলে জানান তিনি।
আপন মুরগি গুলো পরিচর্যা করার বিষয়ে যথেষ্ঠ প্রশিক্ষন নিয়েছেন। তিনি মুরগি গুলোকে নিজস্ব পদ্ধতিতে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে সারা দেশের ৬৪ জেলায় আগ্রহী খামারি বা শৌখিন লোকদের কাছে সরবরাহ করে থাকেন। এক্ষেত্রে তার বড় সহায়ক অনলাইন মাধ্যম। শখের মুরগিওয়ালা’ ফেইসবুক পেজ ও ইউ টিউব চ্যানেলের মাধ্যমেই প্রধানত কেনা বেচা হয় মুরগি গুলো। সম্প্রতি তিনি জাতীয় প্রাণি সম্পদ প্রর্দশিনী ২০২৪ এ সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে প্রথম পুরষ্কার অর্জন করতে সক্ষম হন।
আপন শুধু নিজেই স্বাবলম্বী হন নি বরং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন আরো কিছু বেকার যুবকের। আপন ভালোবাসেন স্বপ্ন দেখতে আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য পরিশ্রম করতে। তার পরিল্পনাতে আছে ভবিষ্যতে খামারটি আরো বড় করে তোলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন।
আপনার মতামত লিখুন :