ঋতুবৈচিত্র্যে বদলে যায় আবহাওয়া। একই সঙ্গে মানবদেহেও নানা রকম সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এসব সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে ত্বকে। মৌসুমের অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় গরমকালে ত্বকের ওপর ধকল পড়ে সবচেয়ে বেশি। এই রোদ, এই বৃষ্টি, এই ভ্যাপসা গরম। আর এতে ঘামে জেরবার হয়ে পড়ে ত্বক। এর ওপর রয়েছে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি, যে কারণে ত্বকের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। ঘাম থেকে ময়লা জমে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ত্বকের ভেতর থেকে আর বের হতে পারে না ক্ষতিকর টক্সিন। ব্রণ, র্যাশ, কালো দাগ, ঘামাচির মতো অহেতুক উপদ্রব শুরু হয় ত্বকে। নিয়মিত যত্ন না নিলে এসব থেকে ত্বকের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। গরমকালে ত্বক সুরক্ষায় যা করতে পারেন তা হলো আবহাওয়া উষ্ণ হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। ত্বক ভালো রাখতে চাই প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। কিছু ভিটামিনও ত্বক ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে, যা আপনি পাবেন খাবার থেকে।
শরীর সুস্থ রাখতে ভিটামিন ‘সি’ খুবই প্রয়োজন। এতে পর্যাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বককে সূর্যালোকের কারণে হওয়া ক্ষতি থেকে বাঁচায়। এ ছাড়া ত্বক উজ্জ্বল করে ও রোদ থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে।
পালংশাক, টমেটো, লেবু, আঙুর, কমলা, ক্যাপসিকাম, পেঁপে ও লেবুতে পাবেন ভিটামিন সি, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক উজ্জ্বল করে, রঙের ভারসাম্য বজায় রাখে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের রোদে পোড়াভাব কমায়, অকাল বলিরেখা ও মৃত কোষের সমস্যার সমাধান করে। শক্তিশালী কয়েকটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মধ্যে অন্যতম হলো ক্যারোটিনয়েড, যেমন বিটা ক্যারোটিন, লাইকোপিন, আইসোফ্লেভোন্স, রেসভারাট্রোল, আলফা লিপোইক অ্যাসিড, গ্লুটাথিওন ইত্যাদি।
ক্যারোটিনয়েডয়ের ভালো উৎস হচ্ছে গাজর, মিষ্টিআলু, হলুদ ক্যাপসিকাম, পালংশাক, কুমড়া ও ব্রকলি।
ভিটামিন ‘ই’ খুব ভালো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা ত্বককে উন্মুক্ত রেডিকেল থেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে। এ ভিটামিন ত্বককে রোদ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে, কোলাজেনের ভাঙন রোধেও ভূমিকা রাখে।
বীজ ও বাদাম, আখরোট, সূর্যমুখীর বীজ ও তিসির বীজে পাবেন ভিটামিন ‘ই’। এই ভিটামিন সূর্যালোক থেকে রক্ষা, আর্দ্রতা রক্ষা ও ত্বক মসৃণ রাখে।
জিংক ত্বকের ক্ষত দূর করে ও নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে। জিংকসমৃদ্ধ খাবার ত্বককে ব্রণ ও দাগ মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। আখরোট, সূর্যমুখীর বীজ ও ব্রকলিতে পাবেন জিংক।
ত্বক ভালো রাখে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে আর্দ্র রাখে ও ত্বকের সুরক্ষার স্তর নিশ্চিত করে। এর প্রদাহনাশক উপাদান ব্রণ, লালচেভাব ও এরিথিমা কমাতে সাহায্য করে। ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ মাছ, যেমনÑ স্যামন। এ ছাড়া তিসির বীজ ও অ্যাভোকাডো।
এসব খাবার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখুন। এতে এই গরমেই শুধু নয়, যে কোনো আবহাওয়ায় আপনার ত্বক সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :