সর্বশেষ :

রাজশাহীতে নির্মাণ হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবন, মামলার আতঙ্কে সাংবাদিকরা


অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় : জুলাই ৩১, ২০২৪ । ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ
রাজশাহীতে নির্মাণ হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবন, মামলার আতঙ্কে সাংবাদিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দপ্তরে অভিযোগের শেষ নেই। খতিয়ে দেখার নজির খুব একটা চোখে পড়ে না। সুশীল সমাজের প্রশ্ন থেকেই যায়, রাস্তা না থাকলে ভবন নির্মাণের প্ল্যান পাশ হয় কিভাবে? নগরীতে নকশাবহির্ভূত বহুতল ভবনের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ হলে হুটহাট মামলার আতঙ্ক সাংবাদিকদের পিছু ছাড়ছে না।

বেশ কিছু তথ্যসূত্রে উঠে আসে রাজশাহী মহানগরীর কাজলা বিলপাড়া এলাকার একটি বহুতল ভবন নির্মাণের চিত্র। যে ভবন নির্মাণের কাজে ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে মৃত ওবায়দুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা বেগম, তার মেয়ে আইরিন সুলতানা ও নুসরাত জাহানের বিরুদ্ধে।

আইরিন সুলতানা ও নুসরাত জাহান রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানার কাজলা এলাকার মৃত ওবায়দুল ইসলামের মেয়ে। বর্তমানে তারা মহানগরীর মতিহার থানাধিন কাজলা বিল পাড়া সড়কে একটি বহুতল ভবন নির্মান করছেন। তবে এই নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম উঠে এসেছে।

স্থানীয়রা জানান, আইরিন সুলতানা ও নুসরাত জাহান এর বিল্ডিং সংলগ্ন উত্তর-দক্ষিণ পূর্ব দিকের গলির বসতিতে প্রায় ১ হাজার মানুষের বসবাস। মূলত প্রায় ৬ ফিট এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করে থাকেন সবাই।

তাঁদের একমাত্র যাতায়াতের রাস্তার বহুতল বিল্ডিং নির্মান করছেন আইরিন সুলতানা ও নুসরাত জাহান।

কিন্তু তিনি নিজের জমি বাদে অতিরিক্ত রাস্তার জায়গা (অর্থাৎ রাসিকের) দখল করে বিল্ডিং নির্মান করছেন। শুধু তাই নয় বিল্ডিং-এর উপরে কার্নিস গুলি বাড়িয়ে দিয়েছেন রাসিকের রাস্তার উপরে। ফলে রাস্তার প্রবেশ মুখ সরু হয়ে গেছে। যার ফলে যে কোন ধরনের দূর্ঘটনা,যেমন অগ্নিকান্ড বা প্রকৃতিক দূর্যোগের মতো ঘটনা ঘটলে এই বসতিতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ী প্রবেশ করতে পারবেনা। আর তাই আইরিন সুলতানা ও নুসরাত জাহান নিয়ম বহির্ভূত বিল্ডিং নির্মান কাজ বন্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়।

সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে মিলে আরও সত্যতা, বহুতল ভবন নির্মাণের সময় ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ করা হয়নি। ভবনের উচ্চতা অনুযায়ী রাস্তা ও ফাঁকা জায়গা ছাড়ার নির্দিষ্ট বিধি থাকলেও তা করেননি তারা। এমনকি এই স্থাপনার অধিকাংশেরই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। তা ছাড়া,ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে জায়গার মালিকেরা কোনো ধরনের জমি ছাড় দেননি। একটি ভবনের সঙ্গে আরেকটি ভবন প্রায় লেগে আছে। এ কারণে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনায় এসব ভবনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সহ জরুরী সেবা কর্মীরা সহজে পৌঁছাতে পারবেন না। ৭ তলা পর্যন্ত ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে,কিন্তু ৭ তলা পর্যন্ত আগুন নেভানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। এ কারণে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। উঁচু উঁচু ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে। অথচ এসব ভবনের ভেতরে যাঁরা বসবাস করবেন,তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে কারও কোনো চিন্তা নেই?

আরডিএর বিধি না মেনে বহুতল ভবন নির্মাণ এমন বিষয়ে জানতে সেলিনা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি তার বাড়ি নির্মান বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেননা।

এদিকে দাপটের সাথে নির্মাণকারীরা জানান, মতিহার থানার ওসি তদন্ত এসআই সাহিন তাঁদের লোক। এই ইমারত নির্মান নিয়ে কোন রকম সংবাদ প্রকাশ বা বেশি বাড়াবাড়ি করলে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে মামলা দিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবেন সাংবাদিকদের।

এ বিষয়ে মতিহার থানার ওসি তদন্ত এসআই সাহিনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ওটা আমার বন্ধু বাড়ি নির্মান করছেন। কোথায় কি করবেন জানিনা তবে ওই বিল্ডিংএর আশে পাশে যেনো কাউকে দেখতে না পাই। পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

এ নিয়ে ওই এলাকার ভূক্তভোগী মো. মাসুম বলেন, সেলিনা বেগম,তার দুই মেয়ে আইরিন সুলতানা ও নুসরাত জাহান এবং তাদের স্বামীদের একাধিকবার অনুরোধ করেও কাজ হয়নি। তার দাম্ভিকতা হলো তিনি একজন বিত্তবান মানুষ। প্রভাবশালী মহল দিয়ে চাপ প্রয়োগ ও দেখে নেওয়ার হুমকি এবং টাকা দিয়ে সবাইকে ম্যানেজ করেই কাজ করছেন। এমন কথাও তিনি প্রকাশ্যে বলছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরডিএ’র ইমারত পরিদর্শক মো. মফিদুর রহমান রনি জানান, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অমান্য ও আইন উপেক্ষা করে দুর্নীতির মাধ্যমে ভবন নির্মাণের কোন সুযোগ নেই। করলে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর আপনাদের এমন কোন বহুতল ভবনের বিষয়ে অভিযোগ থাকে তবে আপনারা লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

পুরোনো সংখ্যা

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
%d bloggers like this: