সর্বশেষ :

আ. লীগ নেতা বাবুল হত্যা : কি ঘটেছিলো সেদিন


অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় : জুলাই ১, ২০২৪ । ৬:১৩ অপরাহ্ণ
আ. লীগ নেতা বাবুল হত্যা : কি ঘটেছিলো সেদিন

রাজশাহী প্রতিনিধি : দুই গ্রুপের নেতাকর্মীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের মৃত্যুর ঘটনার এরইমধ্যে বেশ কিছু রহস্যের ডানাপালা মেলতে শুরু করেছে।

এরইমধ্যে বাবুল নিহতের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় রাজনীতি। এ ঘটনায় পরস্পরকে দোষারোপ করে পালটাপালটি বক্তব্য দিচ্ছেন জেলার শীর্ষ নেতারা।

এদিকে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বাঘা মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বাবুলের জানাজায় সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ শাহরিয়ার আলমআওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ-সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ এবং বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলুকে এই হত্যাকাণ্ডে দোষারোপ করেছেন।

এরপর থেকে রাজশাহীর রাজনীতি অনেকটাই এখন উত্তাপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে।
তবে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এমন বিস্ফোরক মন্তব্যের পর পরই বেশ কিছু ওই দিনের ঘটনার রহস্য এবার সামনে আসতে শুরু করেছে।

তবে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (এমপি) শাহরিয়ার আলমের এমন মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য
এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, বাঘায় আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার ‘কোনো কারণ নেই’ উল্টো তিনি নিজেই এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে বলেছেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন এই লাশটির দরকার ছিল একটি রাজনৈতিক পক্ষের। যেটাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক কোনো প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায়।’

এদিকে, এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে ঘিরে শাহরিয়ারের এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। এছাড়াও নেটিজনেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলছেন, ওই দিনকার ঘটনার দায় শাহরিয়ার আলম এমপির এড়ানোর কোন সুযোগ নেই।

ঘটনার ওই দিনের চিত্র কি বলছে ?

গত ২২ জুন শনিবার বাঘার পৌর মেয়র আক্কাস আলীর অনিয়ম ও দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে শনিবার সকাল ১০টায় বাঘা উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ।অপরদিকে,পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঠিক একই সময়ে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকদের আধিপত্য বিস্তার, অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দলিল প্রতি অতিরিক্ত ফ্রি আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালন করেন আক্কাস আলী ও তার সমার্থকরা।
এরপর কিছুক্ষণপর দু পক্ষ সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে প্রথমের দিকে বাঘা ভুমি অফিসের সামনে অবস্থান নেয় ,আক্কাস গ্রুপের সমর্থকরা। এর উল্টো পাশে উপজেলা গেটের সামনে নিহত বাবুল সহ শাহরিয়ার এমপির অনন্য নেতাকর্মীরা উপজেলা গেটের সামনে লাঠিসোটা ও দেশিয় অস্ত্রস্ত্র নিয়ে শক্ত অবস্থান নেন।
এর কিছুক্ষণ পরে উপজেলা অডেটিরিয়ামের সামনে থেকে মাথায় গুরুত্বর যখম অবস্থায় বাবুলকে উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু ঘটনাস্থলে অনন্য নেতাকর্মীরা থাকলেও বাবুলকে উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। পরে পুলিশ আহত বাবুলকে উদ্ধার করে নেতকর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, লাল বৃত্তের চিন্হের মধ্যে যে ব্যক্তিটি দেখা যাচ্ছে তিনি বাঘা পৌর যুবলীগের সভাপতি শাহিন আলম।সে নিহত বাবুলের প্রতিবেশী এবং শাহিনুর রহমান পিন্টুর ব্যবসায়ী পার্টনার। ওই সময় গুরুত্বর আহত বাবুল রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে কাতড়াতে থাকলেও তাকে উদ্ধার করেনরি শাহিন আলমসহ অনন্য নেতাকর্মীরা।

আরেকটি ভিডিওতে লাল বৃত্তের মাঝে সাদা গেঞ্জি ও মাথায় টুপি,পরিহিত দ্বিতীয় ব্যক্তিটি হচ্ছেন বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস সরকার । সে বাবুলের ওই সময় পাশে থাকলেও তাকে রক্ষা বা উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, বাবুল হত্যার মূল কারণ হচ্ছে দলিল লেখক সমিতির বিরোধের জের। তবে এটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। তাদের মূল উদেশ্শ হচ্ছে রাজনৈতি ফায়দা হাসিলের।
ওই সুত্রটি আরো বলছে,বাবুল যেহুত পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন তাই তিনি এলাকায় চাঁদাবাজি , জুয়া, অবৈধ বালুঘাটসহ নানান অপকর্মে বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তার এমন ভুমিকার জন্য অনেক সময় তার নেতাকর্মীরে তোপের মুখে পড়তে হত।

এনিয়ে মাস কয়েক আগে স্থানীয় যুবলীগের সভাপতি শাহিন আলম এসবের প্রতিবাদ করায় নিহত বাবুলের নিজ বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে যুবলীগ নেতা শাহিন আলমের কাছ থেকে কোন রকম নিস্তার পান নিহত বাবলু।

এদিকে, নিহত বাবলুকে কোপানোর ঘটনার কিছুক্ষণ পর বাঘা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহিনুর রহমান পিন্টুর ক্যাডের বলে আখ্যায়িত জাহিদ নামে এক যুবক তার নিজ ফেসবুক আক্যাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দেয় । সেখানে তিনি লিখেন , ঝামেল মুক্ত সমান , সমান , প্রো.. শেষ, হিসেব সমান সমান। এটা নিয়ম। আমি শাহরিয়ার ভাইয়ের কর্মী। তার কিছুক্ষণ পরে পোস্টটি ফেসবুক থেকে মুছে ফেলেন জাহিদ।

ঘটনার পরের নিহত বাবুলের সঙ্গীদের মিষ্টি মুখ :

ঘটনার পরের দিন ২৩ জুন রোববার দুপুরে বাঘা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহিনুর রহমান পিন্টু ও তার অনুসারীরা। হঠাৎই পিন্টুর কক্ষে জড়ো হয় সেদিনকার ঘটনার আলোচনা করতে থাকে। এরপর কিছুক্ষণ পরই তার এক অনুসারিকে দিয়ে বাজার থেকে মিষ্টি নিয়ে এসে উপস্থিত সকলকে মিষ্টি মুখ করায়।তবে তার এমনকর্মকাণ্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে রহস্যের ডালপালা জন্ম দিয়েছে। তবে নিহত বাবলুর অনুসারি এবং মেয়র আক্কাসের অনুসারিরা সেদিনকার ঘটনার তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানান।

পুরোনো সংখ্যা

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
%d bloggers like this: