সর্বশেষ :

ধর্ষণ ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি করা চক্র আটক 


অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪ । ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
ধর্ষণ ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি করা চক্র আটক 

মো. মানিক হোসেন : রাজশাহীতে আলমগীর হোসেন রয়েল নামের এক ব্যক্তি স্ত্রী ও শালিকাদের সহযোগিতায় বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও সহজ সরল নারীদের প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় নিয়ে আসতেন। এরপর ধর্ষণ করতেন সেই সাথে ভিডিও ধারণ করতেন। সেই ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে স্ট্যাম্পে সই স্বাক্ষর করে নিতেন। দাবি করতেন মোটা অংকের টাকা। এমন কাজে জড়িত থাকায় অবশেষে এই ব্লাকমেইল, ধর্ষণ ও প্রতারক চক্র আটকে পড়েছে র‍্যাবের হাতে।

শক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় র‍্যাবের সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাবের সিও মুনীম ফেরদৌস  এসব কথা জানান। র‍্যাব জানায়, বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ মহানগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ভদ্রা এলাকা থেকে এই চক্রকে আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন হেঁতেম খাঁ সবজি পাড়ার নূরুল ইসলামের ছেলে  আলমগীর হোসেন রয়েল (৪০), আলমগীর হোসেন রয়েলের স্ত্রী হেলেনা খাতুন (৩০), নামো ভদ্রার আলমগীরের স্ত্রী দিলারা বেগম (৩৫), উপর ভদ্রার আফজাল হোসেনের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৪২)।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২ টায় ভুক্তভোগী  বাড়ী থেকে কেনাকাটার উদ্দেশ্যে রাজশাহী কোর্টস্টেশন এলাকায় আসেন। কেনাকাটার এক পর্যায়ে দেখতে পান তাঁর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটি হারিয়ে গেছে। মোবাইল ফোনটি খোঁজাখুঁজি করার সময় পরিচিত  আলমগীর হোসেন রয়েল জিজ্ঞাসা করে ভুক্তভোগীর কিছু হারিয়ে গেছে কিনা। প্রতিউত্তরে ভুক্তভোগী বলেন মোবাইল ফোনটি খুঁজে পাচ্ছেন না। তখন আলমগীর হোসেন রয়েল বেলা ২ টায় ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনটি পাইয়ে দিবে বলেন। সেজন্য অজানা একটি অটোতে উঠিয়ে তাঁকে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ভদ্রা এলাকায় নিয়ে যান।

সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় থাকা হেলেনা, দিলারা ও মমতাজকে দেখতে পান ভুক্তভোগী। পরে আলমগীর হোসেন রয়েল, হেলেনা, দিলারা ও মমতাজ মিলে মোবাইল পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ফুসলাইয়া, ভুলবুঝিয়ে ও বিভিন্ন ধরণের প্রলোভন দেখান। এরপর তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঘটনাস্থল থেকে ভদ্রা মহল্লার ৩নং রোডের বাসা ৫০৪৩ নম্বর পদ্মা আবাসিক এলাকার মো. সাব্বির সুলতানের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে জোরপূর্বক আটক করে এবং একপর্যায়ে আলমগীর হোসেন রয়েল ভুক্তভোগীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। একপর্যায়ে আলমগীর হোসেন রয়েলের শোবার ঘরে ধর্ষণ করেন। আলমগীর হোসেন রয়েল ধর্ষণের সময় হেলেনা, দিলারা ও মমতাজ গোপনে ভিডিও ধারণ করেন। ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ শেষে ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার ভয় দেখিয়ে ৩ টি ১০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে ঘরেই জোরপূর্বক আটক করে রাখে।

এরপর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঐ ঘটনাস্থলে র‌্যাবের টিম অভিযান পরিচালনা করে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে এবং আলমগীর হোসেন রয়েলসহ ওই চক্রকে গ্রেফতার করে।

র‍্যাব জানায়, এই চক্রের আলমগীর হোসেন রয়েল একজন প্রতারক ও ব্লাকমেইলকারী। আলমগীর হোসেন রয়েল, তাঁর স্ত্রী ও শালিকারা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন মহিলাদের ও পুরুষদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে, ভুল বুঝিয়ে ওই ভাড়া বাড়ীতে সংগোপনে নিয়ে আসেন। জোরপূর্বক অনৈতিক কার্যকলাপ করতেন এবং গোপনে ভিডিও ধারণ শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। সেই সাথে বিভিন্ন স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবী করেন। এভাবে অনেকের কাছ থেকে বিভিন্ন মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছেন। এর পূর্বে আলমগীর হোসেন রয়েলের নামে ইতিপূর্বে নারী ও শিশু আইনে ১ টি মামলা রয়েছে।

আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পুরোনো সংখ্যা

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯  
%d bloggers like this: