রাজশাহী সংবাদদাতা : রাজশাহী মহানগরীর মোল্লাপাড়া পূর্ব টালিপাড়া এলাকায় অবস্থিত রাজশাহী শহর খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নে লিমিটিডের সদস্যরা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মানববন্ধন করেন। সেই সাথে সাধারণ সদস্য ও সচেতন মহল স্বারকলিপি দিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
রবিবার (২০ আগষ্ট) সকাল সাড়ে দশটায় রাজশাহী শহর খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড অফিসের ৪০ থেকে ৫০জন সদস্যের উপস্থিতিতে অবস্থান কর্মসূচি ও ৭২ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়।
সেখানে সকলে দাবি করেন নিয়োগ ও দূর্নীতির যে ঘটনা সংবাদ মাধ্যম গুলোতে প্রকাশিত হচ্ছে সেই বিষয়টি সকল সদস্যদের সামনে সচ্ছতা প্রকাশ করতে হবে। একই সাথে নির্বাচনের আগে এজিএম করতে হবে। যা তিন দিনের মধ্যে করতে হবে এমনটি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ সদস্যগণ।
পরর্তীতে গণমাধ্যম কর্মীরা অভিযুক্ত সাবেক সেক্রেটারি ও বর্তমান বিতর্কিত ম্যানেজার রতন টুডুর কাছে বিষয়টি সত্যতা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন এবং বলেন এটি একটি চক্রান্ত ও সেই নির্বাচনকে বাঞ্চাল করার জন্য এটি করছে। তিনি আরো বলেন ১৭শ থেকে ১৮শ সদস্যদের মধ্যে এখানে গুটি কয়েক এসেছে । এমন সমস্যা কিছু মানুষের থাকবেই । এটা কোন সমস্যা না। বলে সন্মানিত সদস্যদের অবজ্ঞা করেন।
পরবতীতে উপস্থিত একজন সদস্য বলেন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) আমি মূর্খ মানুষ । আমি ক্রেডিট অফিসে এক সপ্তাহ আগে আমার বই জমা দিয়ে গেছি আমার লাভ অংশ বইয়ে তোলার জন্য কিন্তু আজও তারা আমার লাভ বইয়ে তোলে নি। তারা আবার আমাকে বুঝায় সব কিছু সফ্টয়্যারে আছে। আরে বাবা আমি এত কিছু বুঝি না আমার টাকা আমার বইয়ে তুলতে হবে। কিন্তু তারা নানা তাল বাহানা করে এড়িয়ে যায়। প্রায় সকল সদস্যদের বইয়েই একই ঘটনা ঘটাচ্ছে। বছরের পর বছর যায় কিন্তু বইয়ে লাভের টাকা উঠে না। এগুলো টাকা গেল কই ??
অভিযোগের ভিত্তিতে অফিসের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়ের ম্যানেজার আন্দ্রিয়াসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেছেন। যে বইয়ে টাকা তোলা হয়না।
অপর দিকে রতন টুডুর সাথে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে থাকলে তিনি বার বার সংবাদিকদের দোষারোপ করতে থাকেন যে তারা এগুলো প্ল্যান করে করছে। একই সময়ে ক্রেডিট অফিসে সিনিয়র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গাব্রিয়েল হাঁসদার ওপরে খারাপ ব্যবহার করেন বর্তমান বিতর্কিত ম্যানেজার রতন টুডু।
ঘটনাটি দেখে সাধারণ সদস্য উত্তেজিত হয়ে ঘার ধাক্কা দিয়ে রতন টুডুকে অফিস থেকে বের করে দেন। তারা দাবি তোলেন অচিরেই যদি এমন অভদ্র ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা না হয় তবে ক্রেডিট অফিসের সামনে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে এবং অফিস তালা মারবে এমটিও নিশ্চিত করেন সাধারণ সদস্যবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী শহর খ্রিষ্টান কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সভাপতির ক্ষমতা বলে দেয়া হয়েছে বির্তকিত নিয়োগ । যেখানে ক্রেডিটের সাবেক সেক্রেটারি ও বর্তমান ম্যানেজার রতন টুডু সুযোগ পেয়েছে ক্ষমতা বলে ও দুর্নীতি করে এমটি অভিযোগ উঠেছে সাধারণ জনগণের থেকে। যেটি গত ১৪ই জুলাই ২০২৩ তারিখে জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেডিটের সদস্যদের মধ্যে ও সচেতন নাগরিকদের মধ্যে টাকা হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্র ধরে সাংবাদিকরা তথ্য নিতে গতকাল ১৯ আগষ্ট রাজশাহী শহর খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নে গেলে তারা সাংবাদিকদের ওপরে চড়া হন ও হুমকি ধামকি দেন।
সাংবাদিকরা তাদের জনগণের পাস বইয়ে লাভের দেয়া হয় না এমন অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে চাইলে তারা সম্পূর্ণ বিষয়টি সদস্যদের উপরে দোষারোপ করেন। যে তারা সেটি তোলার কথা বলেন না।
পরবর্তীতে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয় নিয়ে বারো সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মধ্যে ২জন পদত্যাগ ও ৫জন অনস্থা ডাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বিকার করে বলেন তারা কোন ধরণের অনাস্থাপত্র হাতে পাই নি।
অপর দিকে কমিটির সদস্য বুলবুলি হাঁসদার কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রমান সহ অনাস্থাপত্র বর্তমান সেক্রেটারি সুবাস মারান্ডির কাছ থেকে রিসিভ করিয়ে ছেন ও স্বাক্ষর করিয়েছেন তার প্রমান দিয়েছেন।
বিশ্বস্ত সূত্র জানা গেছে, এই নিয়োগ পরিক্ষা বর্তমান সভাপতি ও আগের সেক্রেটারি রতনের সাজানো নাটক । নাম মাত্র পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এই কারণে এই নিয়োগ পরীক্ষার কমিটি থেকে প্রাক্তন সহ সভাপতি ইস্তফা নিয়েছে।
তাঁর কাছে বিয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের উপড় চড়া হোন এবং সাংবাদিকদের হুমকি ধুমকি দেন দেখে নিবো বলেন। পরবর্তীতে অত্র প্রতিষ্ঠানের ট্রেজারার ফুলজেনসিয়াস মারান্ডি ও সভাপতি সঙ্গ দেন এবং তারা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন আমাদের কাছে কেউ অনান্থা দেয় নি আর বর্তমান মেনাজারকে ১২জন সদস্যই গ্রহণ করে নিয়েছে। নিয়োগে কোন ধরণের সমস্যা নেই।
বিষয়টি নিয়ে যারা অনাস্থা দিয়েছে তাদের মধ্যে বুলবুলি হাঁসদার কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো অনান্থা ডেকেছি। সেই সাথে প্রতিবাদও করেছি। এখন পর্যন্ত তারা কোন ধরণের সিদ্ধান্ত নেয় নি এর ঘটনার সমাধান কল্পে । আর আমার সাথে ২জন ইস্তফা দিয়েছে এবং আরো ৪জন অনান্থা ডেকেছে। রেজিনা বিশ্বাস, কামিল্লা বিশ্বাস, বাবুলাল মারান্ডি ও এডুয়ার্ড হেম্ব্রম যেটি তারা ১৫ জুলাই ২০২৩ তারিখে তাদের দেয়া সেক্রেটারি সুবাস মারান্ডি গ্রহণ করে স্বাক্ষর করেছেন। অথচ তারা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছেন।
এই নিয়োগ পরিক্ষা নিয়ে ক্রেডিটের সদস্যদের মধ্যে এক ধরণের শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে ক্রেডিটের বারো সদস্য বিশিষ্ট কমিটি মধ্যে ২জন পদত্যাগ ও ৫জন অনাস্থা ডেকেছে। বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহলও সভাপতি বরাবর এর সমাধান ও সচ্ছতা কল্পে চিঠি দিলেও তারা তাদের অবজ্ঞায় বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যায়।
কমিটির কয়েকজন সদস্য বলছে ( নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) এই নিয়োগে আমরাও প্রতিবাদ জানিয়েছি। একই সাথে অথের্র ছয় নয় হয়েছে । আমরা অনাস্থা ডাকলেও তারা সেটি অবজ্ঞা করেছে। নিয়েম আছে অনাস্থা ডাকার ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে দ্রুত সমাধান কল্পে মিটিং হতে হয় ও এর সমাধান করতে হয়ে । কিন্তু সভাপতি ক্ষমতা বলে নানা তাল বাহানা করে এটি এড়িয়ে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :