প্রবাসীর লাশটি চিনবে কিভাবে
মোঃ মানিক হোসেন
কচি মন রক্ত গরম করিনি কোনো কাজ
মায়ের ডাক বাবার শাসন পড়ছে মনে আজ।
খেলেছি সেদিন ঘুরেছি কত স্বপ্ন বুনেছি যত
মধুর স্মৃতি পুড়লে তত জাগে বুকে শত ক্ষত।
হয়েছি বড় ধরেছি ভাব জন্মেছি হয়ে জমিদার
বুঝিনি কষ্ট মা বাবার কাছে করেছি আবদার।
পারেনি কেউ বলতে কথা দেখিনি রাঙাতে চোখ
গরম রক্তে করেছি দন্দ লাগেনি বুকে চোট।
অভাব ঘোচাতে ইচ্ছে হলো যাবো দূর বিদেশ
পড়লো পা বন্দী হলাম দালাল ঘিরলো বেশ।
বাবার জমি হলো নিলাম স্বপ্ন দিলাম বিসর্জন
সবার চেয়ে বড়লোক হতে করব টাকা উপার্জন।
পরিবার হলো চরম অভাবি পড়লাম আমি দুর্ভোগে
দেখিনা স্বজন হয় না ভোজন ধরলো কঠিন রোগে।
ব্যর্থ হলেন বাবা আমার ব্যর্থ হলাম আমি
পড়লাম ফান্দে পরাণ কান্দে টাকা খোঁজা বোকামি।
বন্ধ হলো টাকার পা এলো না কোন কাজ
চলতে হলো বিদেশ ফটক মিললো কয়েদির সাজ।
মারের পরে মারতে থাকে ভিসা নাকি ছিল জাল
গরম বালি ঠেকায় গায়ে পিটিয়ে তোলে ছাল।
দালালের কাজ দালাল করেছে করে না যোগাযোগ
টাকার জন্মে জন্মেছে শালা মিটাবো টাকার ক্ষোভ।
মরতে বসেছে মা বাবা আজ মরতে বসেছি আমি
দেশের চেয়ে কর্ম কি আর বিদেশ মাটিতে দামি?
বিদেশের চেয়ে দেশের মাটিতে খাটি যদি একবেলা
চৌদ্দপুরুষ পারবে খেতে বসে বসে তিনবেলা।
বোঝে না কেউ মনের কষ্ট দেখেনা চোখের জল
মারে শুধু এসে লাগে শরীরে বুকে হারাই বল।
কেউবা মরে বিদুৎ শকে কেউবা হয় গুম
কি-বা হবে জীবন রেখে ভাবি আমি ততক্ষণ।
কারও লাশ ফেরে দেশে হেসে কারও ফেরে চুপ করে
আমার লাশটি চিনবে কিভাবে ঝলসে গেলে শেষে।
ফিরবো কি মা তোমার কোলে পাবো কি কোন কাজ
দূর হবে কি কষ্ট শেষে আসবে কি সু-দিন আর!
ফিরলে দেশে আর যাবো না বিদেশ খাটনি খাটতে
দিস মা জায়গা তোর বুকে উপায় দিস বাতলে।
আপনার মতামত লিখুন :