র্যাব জানিয়েছে, চক্রটি প্রায় ৪০০ গ্রাহকের এক কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিআরটিএর সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সিএনএস লিমিটেড বাংলাদেশের সফটওয়্যার দুর্বল হওয়ায় হ্যাকাররা সহজে হ্যাক করে। শুধু বিআরটিএ নয় ডেসকোর ওয়েবসাইটও হ্যাক করেছিল এ চক্রটি।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, এ চক্রের মূলহোতা কম্পিউটার প্রকৌশলী মো. শাহরিয়ার ইসলাম (২৬), তার অন্যতম সহযোগী মো. আজীম হোসেন (২৭), মো. শিমুল ভূঁইয়া (৩২), রুবেল মাহমুদ (৩৩), ফয়সাল আহাম্মদ (২৩) ও আনিছুর রহমান (২৩)।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, রোববার রাতে র্যাব-৪ এর একটি দল রাজধানীর মিরপুর, কাফরুল ও গাজীপুর সদর এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সিপিইউ, মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, পেনড্রাইভ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ও অন্যান্য সরঞ্জামাদিসহ নগদ ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫৯ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের আইনও গণমাধ্যম শাখার মূখপাত্র জানান, গত ১০ মে সিএনএস লিমিটেড বাংলাদেশের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, কোম্পানির মাসিক লেনদেনের বিবরণীর সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্টের লেনদেন বিবরণী যাচাই-বাছাই শেষে বিআরটিএর ৩৮৯টি ট্রানজেকশনের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার গরমিল হয়।
সিএনএস লিমিটেড বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে ওই ট্রানজেকশনের পেমেন্ট স্ট্যাটাস পেইড দেখালেও মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্টে কোনো টাকা জমা হয়নি।তিনি জানান, এ ঘটনায় সিএনএস লিমিটেড র্যাব-৪ এর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
আল মঈন আরও বলেন, সিএনএস লিমিটেড বাংলাদেশ কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভিস মিরপুরস্থ একটি সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট কোম্পানি। যারা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানির সফটওয়্যার ও প্রযুক্তিবিষয়ক কাজ করে। প্রতিষ্ঠানটি বিআরটিএর সঙ্গে গত ১০ থেকে ১১ বছর ধরে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে বিভিন্ন গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ফি, বিভিন্ন ব্যাংক এবং অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ ও পরে বিআরটিএতে হস্থান্তরের মাধ্যমে যাবতীয় লেনদেন করে থাকে।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার শাহরিয়ার বিভিন্ন আন-ইথিক্যাল হ্যাকিং ম্যাথড এ্যাপ্লাই করে অভিনব কায়দায় সিএনএসের ওয়েবসাইটের পেমেন্ট গেটওয়ে হ্যাক করার মাধ্যমে মানি রিসিপ্ট প্রস্তুত করতেন। এভাবে তারা সাধারণ মানুষ থেকে বিভিন্ন গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ফিসহ বিভিন্ন কাজে অর্থ সংগ্রহ করতেন।
তাদেরকে অর্থ পরিশোধের মানি রিসিপ্ট প্রদান করা হতো, যদিও কোনো টাকা সরকারি ফান্ডে জমা হতো না।
মিরপুরে মায়ের দোয়া ভিজনেন্স সেন্টার ও চাঁদপুর ভিজনেন্স সেন্টার খুলে প্রতারণার মাধ্যমে তারা সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আত্মসাত করতেন। র্যাব বলছে, তারা গত ১২ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত সফটওয়্যারের নকল কোড ব্যবহার করে তৈরিকৃত ৩৮৯টি মানি রিসিপ্ট প্রস্তুতের মাধ্যমে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হ্যাক করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :