মোঃ মানিক হোসেন :
রাজশাহীতে কলেজ শিক্ষার্থীকে স্বপক্ষে আনতে পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়েছে রাজশাহী জেলা বাঘা থানা পুলিশ। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরাফাত সাঈদ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ও মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে পুলিশের চাঁদাবাজির কল রেকর্ড ফাঁস করার পর এমনভাবে পুলিশের রোষানলের গুগলিতে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরাফাত সাঈদ বাঘা উপজেলার বলিহার (হাজিপাড়া) গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে।
পুলিশের রোষানল থেকে মুক্তি পেতে ও শিক্ষাজীবন নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার (১৬ মে) বরেন্দ্র প্রেসক্লাবে পরিবারসহ একটি সংবাদ সম্মেলন করেন আরাফাত সাঈদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কলেজ শিক্ষার্থী আরাফাত সাঈদ জানান, গত বছর ৩০ নভেম্বর বাগমারা থানার এস আই আল ইমরান তাঁকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করেন। সেই ঘটনায় তিনি সংবাদ সম্মেলন করে চাঁদা দাবির অডিও কল রেকর্ড ফাঁস করেন। সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হবে বলে হুমকিও প্রদান করেন সে সময়ের জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী। পুলিশের এমন অনৈতিক কাজ যেন আর না হয় এজন্য পুলিশ সুপারের কথা উপেক্ষা করে সংবাদ সম্মেলন করেন আরাফাত সাঈদ। আর এভাবেই তিনি ফেঁসে গেছেন বলে জানান এই শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনের পর পুলিশ কর্মকর্তার চাঁদাবাজির ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন তাৎক্ষনিকভাবে এসআই আল ইমরানকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর এসআই আল ইমরানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। সেই মামলার আরাফাত সাঈদকে স্বাক্ষী করা হয়।
এরপর বাঘা থানার এস আই মোঃ ছালজার করিম স্বাক্ষরিত নোটিশ পান আরাফাত সাঈদ। গত মাসের মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাজশাহী জেলার বিভাগীয় মামলা হয়। ওই মামলার নম্বর-০৮/২০২৩।
আরাফাত সাঈদ বলেন, প্রথমবারের মত চলতি মাসের বুধবার (৩ মে) সকাল ১১টায় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে,এইচ, এম এরশাদের অফিসে ডাকা হয়। ওই দিন আমি সঠিক সময়ে স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অফিসে যাই। কিন্তু, অফিসের দ্বায়িত্বে নিয়োজিত এক পুলিশ সদস্য বলেন, স্যার জরুরি কাজে বাহিরে আছেন। আপনাকে পরে ডাকা হবে।
স্বাক্ষী থেকে আসামি :
গত মঙ্গলবার (৬ মে) বাঘা থানায় পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় আমাকে ১৯ নম্বর আসামী করা হয়েছে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কিত। পুলিশ কৌশল করে সাক্ষ্য দেয়ার তারিখ পিছিয়ে আমার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় নাম জড়িয়ে ফাঁসানো হয়েছে। যাতে করে সরকারি চাকরির সময় রেফারেন্স দেয়া যায় যে, আমার নামে মামলা আছে।
তিনি জানান, এদিকে দ্বিতীয় বারের মত রাজশাহী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত নোটিশ অনুযায়ী ওই মামলার মামলার স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য আমাকে মঙ্গলবার (১৬ মে) বেলা ১১টার সময় মঙ্গলবার ডাকা হয়।
এদিন স্বাক্ষী দিতে গেলে আটক হতে পারেন বলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের শিকার থেকে মুক্তি পেতে পুলিশের আইজিপিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :