মোঃ মানিক হোসেন :
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী আজ। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখের এই দিনে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনীর স্মৃতিময় কিছু কথা যেমন শিলাইদহ, শাহজাদপুর ও পতিসর এই তিন এলাকায় জমিদারি কর্মসূত্রে রবীন্দ্রনাথের আসা-যাওয়া ও অবস্থানের কথা সবার জানা।
কিন্তু, প্রকৃত কর্মভূমি কীভাবে তাঁর মানুষ গঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ল! সেটা গভীরভাবে অনুভব করা হয়নি আজও। কবি রবীন্দ্রনাথের পরিবার, শিল্প, মানুষ ও উজ্জীবন বিষয়ে বুঝতে হলে তাঁর জীবনের এই পর্বের গভীরভাবে অনুধাবন করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শিলাইদহ, শাহজাদপুরের ওপর গবেষক বিশ্লেষকদের গভীর দৃষ্টিপাত ঘটলেও পতিসর ছিল অনেকটাই অবহেলিত। অথচ এই পতিসরে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পল্লী চিন্তা, কৃষি ভাবনা, শিক্ষা, প্রকৃতিও স্বদেশ ভাবনা আশ্চর্যজনক সংহতি অর্জন করেছিলেন।
সে দিকগুলো বিবেচনা করেই জাতির পিতার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী সরকারের বিশেষ প্রচেষ্টায় কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহুমুখী উন্নয়ন যোগ্য করছেন
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকীতে।
এ বছর উৎসবের জাতীয় আয়োজন থাকছে কবির নিজস্ব জমিদারি নওগাঁর পতিসরে। এ জন্য ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়।
জানা যায়, ১৮৩০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর এ অঞ্চলের জমিদারি কেনেন। ১৮৯০ সালে সেই জমিদারি দেখাশোনার জন্য এ অঞ্চলে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পতিসরের এই কাচারিতে অবস্থানকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেশ কিছু কাব্য, গল্প ও প্রবন্ধ রচনা করেন। কাজ শুরু করেন সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য। এখানে তিনি একটি বিদ্যালয়, দাতব্য হাসপাতাল ও একটি কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেছিলেন। এছাড়াও গড়ে তুলেছিলেন মৃৎশিল্প।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা লিখেছিলেন,
তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে
সব গাছ ছাড়িয়ে উকি মারে আকাশে।
মনে সাধ কালো মেঘ ফুঁড়ে যায়—
একেবারে উড়ে যায়— কোথা পাবে পাখা সে?
“আমাদের ছোট নদী চলে আঁকে বাঁকে বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য লেখায় ইতিহাস রেখেছেন এই পতিসরের।
তিনদিনের এই রবীন্দ্র জন্মোৎসবের প্রথম দিনে কাচারীবাড়ির দেবেন্দ্র মঞ্চে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে বিকাল আড়াইটায় আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন আসনের সাংসদ, পুলিশ সুপার ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দরা উপস্থিত থাকবেন।
দ্বিতীয়দিন বিকাল সাড়ে ৩টায় আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন রবীন্দ্র গবেষক আবুল মোমেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সাংসদ আনোয়ার হোসেন হেলাল। এছাড়া অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
তৃতীয়দিন বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন রবীন্দ্র গবেষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক অধ্রাপক জুলফিকার মতিন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি। এছাড়াও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
আপনার মতামত লিখুন :