সর্বশেষ :

বাড়তি দামে গরম রাজশাহীর কাঁচা বাজার


অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় : মে ৫, ২০২৩ । ১০:৩৬ অপরাহ্ণ
বাড়তি দামে গরম রাজশাহীর কাঁচা বাজার

মোঃ মানিক হোসেন:

আমদানি বাড়লে দাম কমবে, আমদানি কমলে দাম বাড়বে এমন স্বাভাবিক হিসেব শাকসবজির বাজারে। মাংসের দাম এক ঝটকায় বাড়লেও বর্তমানে স্থির রয়েছে। স্থির নেই চিনি, তেল, মরিচ, মশলা ও মাছের বাজার। বিক্রেতাদের অজুহাত থাকছে অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বাড়লে তাঁদের জিনিসপত্রের দামও বাড়ে। এতে দোকানীদের কিছু করার নেই। অন্যদিকে, ক্রেতারা খুঁজছেন কারা দাম বাড়াচ্ছে?

শুক্রবার (৫ মে) বেলা সাড়ে ১০টায় রাজশাহীর মাস্টার পাড়া কাঁচা বাজারে সরেজমিনে জানা গেছে ক্রেতা বিক্রেতাদের কেনা বেচার চিত্র।

মোঃ আরিফ একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। বাজার ঘুরে টিপে টিপে কিনছিলেন শাক সবজি। কাঁচা মরিচের দামে করছিলেন দরকষাকষি।

বাজারে কেনাকাটা কেমন লাগছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাজারে এসে শান্তি মত বাজার করব এমন পরিস্থিতি নেই। স্বাভাবিক জীবন যাপনও দুরূহ হয়ে পড়েছে বাজার-সদাইয়ের দাম বাড়ায়। আদা ১২০ টাকা কেজি, কয়দিন আগেই কিনলাম আজ সেটা ১৮০ টাকা কেজি। রসুন ছিল ৭০ টাকা কেজি, আজ কিনতে হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি। আলু ২৮ টাকা কেজি থেকে ৩৫ টাকা কেজি কিনলাম। প্রায় শাক সবজির দাম ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। কাঁচা মরিচ ৫০ টাকা কেজি থেকে হুট করে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাড়ল ৫০টাকা। এমন ভাবে যদি আমাদের বেতনও বাড়ত খুব ভালো হত। কিনতে বাজারে আসলেই ঘাড়ের রগ টেনে ধরছে আর তা না হলে দাম শুনেই ঘামতে হচ্ছে।

নওরিন নেভী নামের একজন বলেন, ইদের আগে চিনির দাম ১১০ টাকায় কিনেছি এক কেজি৷ আজকে কিনলাম ১৩০ টাকায়। দোকানদারেরা বলছেন দাম বেড়েছে, কিন্ত কারা বাড়াচ্ছে এই দাম? মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ৭০ টাকা। হঠাৎ-ই কয়দিনের ব্যবধানে ২৫০টাকা কেজি থেকে আজ ৩২০টাকা কেজি চাইছেন। এভাবে দাম বাড়লে বাজার মনিটরিং দরকার কি?

দোকানী, বড় ব্যবসায়ী কেউ-ই সঠিক কারণ বলতে পারছেন না কেন দাম বাড়ছে। জামাল নামের এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, দাম বাড়ছে এতে শাক সবজি সরবরাহ বা আমদানির ওপর নির্ভর করে। বাজারে সব দ্রব্য বা জিনিসপত্রের চাহিদা ব্যাপক। সেই তুলনায় যোগান কম। দাম বাড়লে আমাদেরও বাড়াতে হয়। অনেক কিছুতে লাভ লোকসান স্বীকার করতেই হয়। দরদামে বাজার কিছুটা গরম।

এদিন বিক্রিতাদের বিভিন্ন ধরনের শাক সবজির মধ্যে আলু ৩০টাকা, লাউ ৫০টাকা, টমেটো, গাজর ৪০টাকা, সজিনা ১২০টাকা, পটল ৫০টাকা, ঢেঁড়স ৮০টাকা, করলা, বেগুন ৪০টাকা কেজি আকারে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটারে ১৯৯ টাকায় বিক্রি হবে। যার দাম ছিল ১৮৭ টাকা। এ ছাড়া ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে। বর্তমান মূল্য ৯৬০ টাকায়। যার দাম ছিল ৯০৬ টাকা। এতে করে নতুন করে বাড়ল ৫৪ টাকা। অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৯ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এখানেও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের নতুন দাম হলো ১৭৬ টাকা। যা প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৬৭ টাকায়। এছাড়া প্রতি লিটার খোলা পাম তেল বিক্রি হবে ১৩৫ টাকা করে।

এদিকে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৭০০, ছাগলের ৯০০, খাশির ১হাজার ১০০টাকায়। কবুতরের বাচ্চা বিক্রি ১১০টাকা পিস হিসেবে। এছাড়া দেশী মুরগী ৫৮০টাকা, সোনালী ৩৩০টাকা, ব্রয়লার ২২০টাকা, লেয়ার লাল ৩৬০টাকা, রাজহাঁস ৬০০ টাকা, দেশী হাঁস ৪২০টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ডিমের দাম হালিতে ৪টাকা বেড়েছে। মুরগীর সাদা ডিম ৪০টাকা, লাল ডিম ৪৪টাকা, দেশী মুরগী ৬০টাকা, হাঁসের ৫৫টাকা, কোয়েল পাখির ডিম ১২ হালি বিক্রি হয়েছে।

অভিভাবকহীন রাজশাহীর কাঁচা বাজার, রহস্য নেই বিগড়ে যাওয়া বাজার। কেনাকাটা করতে নিত্যপণ্যের ভারে নয়, দামের ভারে নুয়ে পড়তে হচ্ছে। এমনটি জানাচ্ছিলেন পারভিন নামের এক গৃহিণী।

তিনি আরও বলেন, এখন আর বড় ব্যাগ বাজারে নিয়ে আসতে হয় না। কিন্তু, বাজার করতে টাকা বেশি নিয়ে আসতে হয়। পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি ছিল। আজ তা ৫০টাকা কেজি। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা লিটার। সেটার দামও বেড়েছে। মাংসের বাজার স্থির আছে কিন্তু ডিমের বাজার আবার বাড়তি। প্রতি হালি ডিমেই ৪টাকা বেড়েছে। শান্তিমত কি কিনে খেতে পারব! রান্না করার গ্যাসের দাম ৫৭টাকাও বাড়ল। কে ভাবছে আমাদের কথা?

পুরোনো সংখ্যা

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
%d bloggers like this: