সর্বশেষ :

রাজশাহীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ


অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ৯, ২০২৩ । ৭:৫৭ অপরাহ্ণ
রাজশাহীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ

মোঃ মানিক হোসেন, রাজশাহী প্রতিনিধি :

রাজশাহী মহানগরীতে ১৩ বছরের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে শওকত হোসেন (৩০) নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত বছরের মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) নগরীর সুলতানাবাদ আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া আল্লামা মুহম্মদ মিয়া কাসেমী রহঃ (ইসলামিয়া মাদ্রাসা) এমন ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী পরিবার নিরপত্তাহীনতায় গণমাধ্যমকর্মীর শরণাপন্ন হলে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় অনুসন্ধান।

অনুসন্ধানে উঠে আসে, ওই শিক্ষক ওই দিন ভোর ৫টায় শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে গিয়ে বলাৎকার করেন। বলাৎকার শেষে কাউকে বিষয়টি না বলতে শিক্ষার্থীকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়ার ভয় দেখানো হয়। শিক্ষার্থী ওই মাদ্রাসার নূর হোসাইন (২৭) নামের আরেক শিক্ষককে বিষয়টি জানালে ওই শিক্ষক উল্টো ৮২টি বেত দিয়ে আঘাত করেন শিক্ষার্থীকে। এতে করে শিক্ষার্থী এমন পাশবিক নির্যাতন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর তাঁকে বাড়িতে পাঠানো হয়। বিষয়টি পরিবারকে জানালে শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার গত মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় দুই শিক্ষকের নামে মামলা দায়ের করেন।

আসামীরা হলেন- নওগাঁর সাপাহার উপজেলার শওকত হোসেন ও রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার বাগদুলি এলাকার নূর হোসাইন।

তারা দুজনই ওই মাদ্রাসার শিক্ষক।
এদের মধ্যে শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে বলাৎকার এবং নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিক্ষার্থীকে দুইদিনে ৪০ ও ৮২টি বেত্রাঘাতের অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক নূর হোসেনের পিতা রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল পুলিশের সন্তান হওয়ায়, মামলার বাদিনীকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদর্শন করেন।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী নগরীর কয়েরদাঁড়া এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে মারাত্মকভাবে মানসিক সমস্যায় ভুগছে ওই শিশু।

এনিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে প্রশ্ন করা হলে জানান, তাঁরা মাদ্রাসার শিক্ষক সচিব মইনুল হক ও প্রধান শিক্ষক ইকরামুল ইসলামকে পাশবিক নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চেয়েছিলেন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপন করেন। কোন ধরনের বিচার না পেয়ে বাধ্য হয়ে থানায় যান তাঁরা।

এবিষয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল লতিফ শাহ বলেন, মামলা দায়েরের পর ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। এছাড়া মামলাটি তদন্তাধীন। এনিয়ে পুলিশ আইনত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

এদিকে ভুক্তভোগীর মা ডালিয়া বেগম ও পিতা তরুন মোল্লা জানান, মামলা করার পর থেকে মাদ্রাসা শিক্ষক বিভিন্ন মাস্তান এবং সন্ত্রাসী বাহিনীকে দিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি প্রদর্শন করছেন। মাদ্রাসা থেকে লোকজন এসে ১০ হাজার টাকা দিয়ে জোর করে মামলা তুলে নিতে জোর করছেন।

সিলিন্দা বটতলা মোড়ে শিশু নাসিমের মায়ের একটি কাপড়ে দোকান রয়েছে। সেই দোকানে বিভিন্ন সময়ে অপরিচিত গুন্ডা বাহিনী গিয়েও বলে তার বড় ধরনের ক্ষতি হবে যদি মামলা তুলে না নেয়া হয়।

এমন অভিযোগে মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক একরামুল ঘটনাটি স্বীকার করে জানান, দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ছাড়া বেশি কিছু বলতে তিনি পারবেন না।

ওই মাদ্রাসার সভাপতি হাসনাত চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জানতাম না। জানার পরে এখন মাদ্রাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এবিষয়ে মাদ্রাসা সতর্ক থাকবে। এরকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা আরও অনেক জায়গায় ঘটে। আর থানায় মামলা হয়েছে শুনেছি তাহলে থানা বিষয়টি দেখবেন।

এ বিষয়ে শিরোইল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা শহিদুল্লাহ কায়সার জানান, অভিযুক্তরা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। তাদেরকে ধরার চেষ্টা চলছে।

পুরোনো সংখ্যা

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
%d bloggers like this: